ইতিহাস ছুঁয়ে খাদ্য সফর বিশেষ ভ্রমণ

নবাবি আম-দরবারের খানদানিরা

ফারুক আব্দুল্লাহ

বাংলার নবাবেরা ছিলেন আমের বড় পৃষ্টপোষক। তাঁদের হাত ধরেই এক সময় রাজধানী মুর্শিদাবাদ আমের জন্যও বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। নবাবেরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান স্বাদের আম গাছ নিয়ে এসে বাগান তৈরি করেছিলেন। তবে নবাবি আমল শুরু হওয়ার বহু আগে থেকেই মুর্শিদাবাদের আম জনপ্রিয় ছিল। তখন মুর্শিদাবাদের আম বলতে চুনাখালির আমকেই বোঝাত।

সুজাউদ্দিন খান বাংলার মসনদে বসলেন। ওড়িশা থেকে চলে এলেন মুর্শিদাবাদে। আম ছিল নবাবের প্রিয় ফল। তাই তিনি বাংলার মসনদে বসেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে আম বাগান তৈরি করেন। সেই বাগানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান স্বাদের শাহি আমের গাছ আনিয়ে লাগান। আম নিয়ে তিনি একটি পৃথক দফতরও খুলেছিলেন। নাম আম্বাখানা। যেখানে আম ও আমগাছ নিয়ে নানান গবেষণা চলত। বিভিন্ন বাগানের আম খাওয়ার উপযোগী হলে আম্বখানায় সংরক্ষণ করে রাখা হত। আমকে সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করা হত। যথা খাস ও আটালা। আঁশ হীন হলে খাস আম। খাস আম মুখে দিলেই গলে যেত। অন্যদিকে আটালা আম বলতে বোঝাত আঁটি আমকে।

মরসুমে গাছের সৌন্দর্য।

মুর্শিদাবাদ শহর ও শহরতলিতে এক সময় নবাবদের প্রচুর আমের বাগান ছিল। এখন অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যে কয়েকটি রয়েছে সেগুলোরও মালিকানা বদল হয়েছে। নবাব ও নিজামত পরিবারের তৈরি আম বাগানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বাগান হল নবাববাগ, সুলতিন বাগ, গোলাপ বাগ, নিষাদবাগ, মোবারক মঞ্জিল বাগ, রওশনবাগ, নাগিনাবাগ, ফারহাবাগ ,হাসান বাগ, আলি বাগ, রইসবাগ (দু’টি), ফৈয়াজ বাগ। এছাড়াও নবাবদের নির্মিত অন্য বাগানেও অল্প হলেও আম গাছ থাকত। যেমন খোসবাগ, রোশনিবাগ, মোতিঝিল ইত্যাদি উল্লখযোগ্য।

আমপসন্দ ছিল নবাবদের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মচারীদেরও। তাঁরাও আম বাগান নির্মাণ করতেন। যেমন দারোগা আর্জুমান্দের বাগান, হাকিম আগা মুহাম্মদীর বাগান ইত্যাদি। বহু বাগান থাকা সত্ত্বেও মুর্শিদাবাদের বাইরে কোনও অঞ্চলে ভাল জাতের আম বাগানের খোঁজ পেলে সেটির দখল নিতেন নবাবেরা। স্থানীয় জমিদারদের দায়িত্ব থাকত সেই বাগানের দেখভাল করার। আমের মরসুমে দারোগা পাঠাতেন সেই বাগানে আমের তত্ত্বাবধান করার জন্য। দারোগার অধীনে থাকত বহু আমতরাস ও শ্রমিকেরা।

বাংলার ফলের রাজা।

নবাবেরা শুধুমাত্র আম খেতেই নয়, আম খাওয়াতেও ভালবাসতেন। নবাবদের অজস্র বাগানে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আম ফলত। সেই সব আমের অধিকাংশই তাঁরা বণ্টন করে দিতেন বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে। ইংরেজ আমলে বাগানের বাছাই করা কিছু শাহি আম নবাবেরা উচ্চপদস্থ ইংরেজ আধিকারিকদের কাছেও পাঠাতেন। এতে নবাবদের সঙ্গে ইংরেজ আধিকারিকদের সুসম্পর্কও বজায় থাকত। কথিত, আমের মরসুমে নবাবেরা মুর্শিদাবাদ শহরে মুশাইরা বা কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। সেখানে দেশ বিদেশের বহু গুণীজন এলে নবাবেরা তাঁদের দেদার আম খাওয়াতেন। ফেরার সময় তাঁদের আম উপহার দিতেন।

রসাল। আমের আরেক নাম।

নবাবরা খুব সূক্ষ্ম রুচি ও মেজাজের মানুষ ছিলেন। আম ছিল তাঁদের অত্যন্ত পছন্দের একটি ফল। সকালে নাস্তায়, দুপুরে এবং রাতেও খাওয়ার পর তাঁরা আম খেতে ভালবাসতেন। নবাবেরা যখন আম খেতে বসতেন তখন নানান প্রজাতির আম নিয়ে বসতেন। নবাবেরা পোলাও সহযোগেও আম খেতেন। মরসুম শেষ হয়ে গেলেও বছরের বিভিন্ন সময় আমের স্বাদ নিতে ইচ্ছে করত নবাবদের। তাঁদের সারা বছর আম খাওয়ার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে আম সংরক্ষণ করা হত। বোঁটায় মোম লাগিয়ে আমকে ঘি, মাখন বা মধু ভরা পাত্রে ডুবিয়ে রাখা হত আম। খাওয়ার কিছু আগে পাত্র থেকে আম বার করে সামান্য গরম জলে ভিজিয়ে নিয়ে আম কেটে নবাবের সামনে পরিবেশন করা হত।

কথিত, নবাবি আমলে মুর্শিদাবাদ শহরে প্রায় ২৫০টির বেশি আম পাওয়া যেত। আজ অধিকাংশই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তবুও বর্তমানে মুর্শিদাবাদ শহরে প্রায় ৬০-৭০ রকম আম পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকটি আমের পরিচয়।

কালাপাহাড়— আমের মধ্যে সেরা। একে আমের রাজা বলা যেতে পারে। পাকা অবস্থায় যথাসময়ে না খেলে আসল স্বাদ পাওয়া যায় না। সময় হওয়ার আগে খাদ আসে, টক পেরিয়ে গেলে ঝাল বলে মনে হবে। পাতলা জলের মত এর রস। ঠিক তৈরি হওয়ার কিছু আগে গাছ থেকে পেড়ে এনে তুলোর মধ্যে রাখতে হয়। প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর একটু একটু ঘুরিয়ে দিতে হয়। ঠিক সময়ে বোঁটার মুখ থেকে রস বের হতে শুরু করে। যখন শুকিয়ে যায় তখনই খাওয়ার উপযুক্ত সময়। আম সম্বন্ধে যাঁরা রসজ্ঞ তাঁরাই এর বেশি কদর জানেন । মুর্শিদাবাদের আমের মধ্যে এটি প্রথম শ্রেণিভুক্ত।

কোহিতুর— মুর্শিদাবাদের জনপ্রিয় আমগুলোর অন্যতম। আমটির সঙ্গে কালাপাহাড় আমের সাদৃশ্য আছে। কালাপাহাড়ে সামান্য সূক্ষ্ম রেশমের মতো আঁশ আছে। কিন্তু কোহিতুর আমে কোনও আঁশ নেই। কথিত, কোহিতুর আমটির উৎপত্তি হয় হাকিম আগা মহম্মদির বাগানে। তবে কোহিতুর আমটি প্রচলন করেন নবাব ওয়ালা কাদার সৈয়দ হোসেন আলী মির্জার তৃতীয় পুত্র নবাব আলী মির্জা সাহেব। আমটি অত্যন্ত নাজুক আম। গাছ থেকে পেড়ে তুলোয় মুড়িয়ে রাখতে হয়। গাছ থেকে মাটিতে আম পড়ে গেলে আমের স্বাদ টক হয়ে যায়। কোহিতুর আম লোহার ছুরি দিয়ে কাটা বারণ। কারণ তাহলে পুরো আম টক হয়ে যাবে। তাই এই আম বাঁশের ছিলকা দিয়ে কাটার নিয়ম। বর্তমানে কোহিতুর একটি দুষ্প্রাপ্য আম। গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় হাতে গুনে ১০-১৫টি আম গাছ রয়েছে। একেকটি আমের মূল্য প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়।

চলছে আম পাড়ার কাজ।

লজ্জাত বক্স— এই আমটি সরঙ্গা নামেই অধিক পরিচিত। এটি একটি উৎকৃষ্ট সুগন্ধি আম। অমৃত ফল বললেও অত্যুক্তি হয় না। আমটির খোসার উপর কালো ছিট ছিট দাগ পড়লেই আমটি খাওয়ার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচিত হয়। কথিত, এই আমটি মুর্শিদাবাদে প্রথম প্রচলন করেছিলেন সুজাউল মুলুক আসফউদ্দৌল্লা নবাব সৈয়দ মহম্মদ জয়লাল আবেদিন খাঁ বাহাদুর ফিরোজ জং। এটি সচরাচর বাজারে পাওয়া যায় না।

রওগনি— অত্যন্ত সুস্বাদু আম। এই আমের সবচেয়ে বড় সমজদার ছিলেন শেষ নবাব নাজিমের দ্বিতীয় পুত্র নবাব বাহাদুর ওয়ালা কাদের সৈয়দ হোসেন আলি মির্জা বাহাদুর। অত্যন্ত সুস্বাদু এই আমটি এখন দুষ্প্রাপ্য আমের তালিকায় পড়ে গিয়েছে।

পঞ্জা পসন্দ —এই আমটির প্রচলিত নাম হীরা। আমটি নবাব ওয়াসিফ আলি মির্জার অত্যন্ত প্রিয় ছিল। তিনিই এই আমটির নামকরণ করেছিলেন। বর্তমানে আমটি দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে।

বাজারে যেতে তৈরি।

হুজুর পসন্দ— এই আমটির উৎপত্তি হয় মুর্শিদাবাদের নবাববাগে। আমটির চলতি নাম চম্পা। আমটি চাঁপা ফুলের গন্ধ যুক্ত অত্যন্ত মিষ্টি। এই আমটি নবাবদের অত্যন্ত পছন্দের ছিল।

রানি পসন্দ— এই আমটি নবাব ফেরাদুন জার দেওয়ান রাজা প্রসন্ননারায়ণ দেবের পত্নীর খুব প্রিয় ছিল। তাই এমন নামকরণ করা হয়েছে। আমটি অত্যন্ত মিষ্টি স্বাদের।

নাজিম পসন্দ— এই আমটি বাংলা সুবার শেষ নবাব নাজিম ফেরাদুন জার অত্যন্ত প্রিয় ছিল। নবাব নিজেই এই আমটির নাম রেখেছিলেন বলে কথিত। অত্যন্ত সুস্বাদু আমটি বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য।

খানুম পসন্দ— উৎপত্তি রাইসবাগে। এই আমটি অত্যন্ত মিষ্টি ও রসাল। আমটির নামকরণ করেছিলেন বাংলার শেষ নবাব নাজিমের তৃতীয় পুত্র আসমান কাদার সৈয়দ আসাদ আলি মির্জা বাহাদুর।

বেগম পসন্দ– এর উৎপত্তি মুবারক মঞ্জিল বা হুমায়ুন মঞ্জিলে। অসাধারণ আম। এই আমটি বাংলা, বিহার ও ওড়িশার নবাব নাজিম হুমায়ুন জার পত্নী এবং বাংলা সুবার শেষ নবাবের মা রাইসুন্নিসা বেগম সাহেবা খুবই পছন্দ করতেন।

আনারস— এই আমটির উৎপত্তি নবাববাগে। আনারসের সুগন্ধে আমটি ভরপুর। পোলাও এর সঙ্গেই নবাবেরা এই আমটি খেতে পছন্দ করতেন। মুর্শিদাবাদে চার রকমের আনারস আম পাওয়া যায়।

ফেরদৌস পসন্দ— এই আমের উৎপত্তি হয়েছিল মুর্শিদাবাদ শহরের গুলাববাগে। আমটি বাংলা বিহার ওড়িশার শেষ নবাব নাজিম নবাব মনসুর আলি খান ফেরাদুন জার পত্নী নবাব ফেরদৌস মহলের খুব প্রিয় ছিল। তাই এই আমের নামকরণও তাঁর নামেই করা হয়।

বড়া ফজরি— এই আমটি দীর্ঘদিন রেখে খাওয়া যায়। আমটি অনেকটা খেজুরের মত। শুকিয়ে গেলেও নষ্ট হয় না। ফলনও খুব বেশি হয়। নবাবদের পছন্দ ছিল।

আলি পসন্দ— এই সুস্বাদু আমটি বাংলা সুবার নবাব নাজিম সৈয়দ জইনুদ্দিন আলি খান বাহাদুর আলি জা-এর খুব পছন্দ ছিল। তাই তাঁর নামানুসারেই এই আমটির নামকরণ। বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য।

খুদ পসন্দ— এই আমটির নামকরণ করেছিলেন নিজামত পরিবারের সদস্য নবাবজাদা ওসমান কাদের সৈয়দ আসাদ আলি মির্জা বাহাদুর। আমটি নবাবেরাও খুব পছন্দ করতেন।

শিরাদার— এই সুস্বাদু আমটির বাংলা, বিহার ও ওড়িশার শেষ নিজামের দ্বিতীয় পুত্র নবাব ওয়ালা কাদের সৈয়দ হোসেন আলি মির্জা বাহাদুরের খুব পছন্দের ছিল।

ভবানী চৌরস— কথিত, এই আমটি রানি ভবানীর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। নবাব হুমায়ুন জা নিজেও এই আমটি খেতে খুব পছন্দ করতেন। তিনি তাঁর হুমায়ুন মঞ্জিলের বাগানে এই আমের বেশ কিছু গাছ লাগিয়েছিলেন বলে জানা যায়।

মিশরী কন্দ— চুনাখালির বিখ্যাত আম। তবে পরে নবাবি বাগানেও এই আম লাগানো হয়েছিল। এই আম মৃদু মধুর গন্ধে ভরপুর অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু।

ফকুন বয়ান— মুর্শিদাবাদের একটি পুরোনো জাতের ভাল আম। এর বিশেষত্ব, আম থেকে কর্পূরের গন্ধ পাওয়া যায়। শুধু কর্পূরই নয়, মুর্শিদাবাদে নবাবদের বাগানে বিভিন্ন মশলার সুগন্ধ যুক্ত আমও ছিল। যদিও আজ সেগুলোর অধিকাংশই বিলুপ্ত।

তালাবি— মুর্শিদাবাদে নবাবি বাগানের একটি বিশেষ আম হিসেবে পরিচিত। একে আমের রানিও বলা হয়ে থাকে। তবে এই আমের পুরনো বাগানের অধিকাংশই নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। এই আমটি খেতে নবাবেরা অত্যন্ত পছন্দ করতেন। তালাবি আমের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল। পাকা তালাবি আম কেটে পাত্রে রাখলে এক ঘণ্টার মধ্যেই তা বরফের মতো গলে যেত।

বিমলী— এই আমের উৎপত্তি রাজাওয়ালা বাগে। এই আমটিকে মুর্শিদাবাদের গৌরব বলে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। নবাবি আমলের লুপ্তপ্রায় যে কয়েকটি আম রয়েছে, বিমলী সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই আমটি নবাবেরা খুব পছন্দ করতেন। আমটি পাকলে মিষ্টি স্বাদের হয়। তবে হালকা টক স্বাদও থাকে। নিজস্ব সুঘ্রাণ আছে। ছোট ও গোল আকারের এই আম পাকলে গাঢ় হলদে রং ধরে। আমটির খোসা পাতলা, আঁটি ছোট হয়।

শরবতী— উৎপত্তি নবাবি আমলের এক দারোগা অর্জুমান্দের বাগানে। আর্জুমান্দ ছিলেন আমের বড় সমজদার। আমটি অতুলনীয় স্বাদের জন্য বিখ্যাত।

শিরাদার— মুর্শিদাবাদের অন্যতম বিখ্যাত আম। অত্যন্ত রসাল এবং সুগন্ধ যুক্ত। বাংলা, বিহার, ওড়িশার শেষ নবাব নাজিম ফেরাদুন জার দ্বিতীয় পুত্র নবাব ওয়ালা কাদের সৈয়দ হোসেন আলি মির্জা বাহাদুরের অত্যন্ত প্রিয় ছিল।

তোতা— নবাবি আমলে মুর্শিদাবাদের অন্যতম একটি বিখ্যাত আম তোতা। অত্যন্ত মিষ্টি এবং সুগন্ধ যুক্ত। নবাব হুমায়ুন জার পত্নী রইসউন্নিসা বেগম সাহেবা এবং মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর ওয়াসিফ আলি মির্জা এই আমটি খেতে খুব পছন্দ করতেন।

বকসু পসন্দ— বড় আকারের ও অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। এই আমের নামকরণ করা হয় বকসু আবদরের নামানুসারে। তিনি ছিলেন নবাব হুমায়ুন জার প্রিয় ভৃত্য। তাছাড়া তিনি আধমণি কৈলাস হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। কথিত, খেতে বসলেই একবারে আধ মণ খাবার খেয়ে ফেলতেন বকসু। কথিত, নবাব হুমায়ুন জা বসকু সাহেবের প্রিয় আমের নামকরণ করেছেন তাঁরই নামে ‘বকসু পসন্দ’।

আমীর পসন্দ— অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুগন্ধ যুক্ত এই আমটি মুর্শিদাবাদ শহরের গুলাববাগে পাওয়া যেত। এই আমটি বাংলা, বিহার, ওড়িশার শেষ নবাব নাজিম মনসুর আলি খান ফেরাদুন জার প্রথম পুত্র এবং মুর্শিদাবাদের প্রথম নবাব বাহাদুর ওয়ালা কাদের সৈয়দ হাসান আলি মির্জার খুব প্রিয় ছিল। বর্তমানে এই আমটি দুষ্প্রাপ্য।

তথ্য সহায়তায়—

১) সৈয়দ আমীর মির্জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের প্রবীণ সদস্য এবং রইসবাগের নির্মাতা রইস মির্জার পুত্র)

২) সৈয়দ রেজা আলি খান (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের প্রবীণ সদস্য)

৩) সৈয়দ বাকের আলি মির্জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের প্রবীণ সদস্য)

৪) সৈয়দ রিজওয়ান আলি মির্জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের সদস্য)

৬) সৈয়দ ওয়াকিল মির্জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের সদস্য)

৭) সৈয়দ দানিস মির্জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের সদস্য)

৮) সৈয়দ মোহাম্মদ মেহতাব জা (মুর্শিদাবাদের নিজামতের পরিবারের সদস্য)

৯) রইস বাগের পুরনো ক্যাটালগ

কভারের ছবি— আম পাড়া চলছে জালতিতে

ছবি— লেখক

(সমাপ্ত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *