পাহাড়িয়া বাঁশি বিশেষ ভ্রমণ

ময়ূর পাহাড়, বাঘমুন্ডি আর মুখোশ গ্রাম চরিদা

মিথুন মুখোপাধ্যায়

মন চায় একটু ঘুরে আসি৷ কিন্তু ইচ্ছে থাকলেই সবসময় উপায় হয় না৷ পরিস্থিতির দ্বারা চালিতে হতে হয়৷ এই যেমন আমরা পুজোতে দার্জিলিং যাওয়া ঠিক করলাম, টিকিট,হোটেল সব রেডি তবু যাওয়া হল না৷ পরিস্থিতি যেতে দিল না৷ তবে এটা বুঝেছি দুম করে দু’দিনের ভ্রমণ হতেই পারে, যদি ইচ্ছে থাকে৷

পাহাড়ে ‌প্রভাত।

দার্জিলিং বাদ৷ তবে অযোধ্যা আছে৷ তবে ওখানেও হোটেলে ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা৷ তাই ঠিক করলাম রাত্রিযাপন পুরুলিয়া শহরে করব৷ তাই বেশি চিন্তা না করে চেপে পড়লাম পুরুলিয়ার ট্রেনে৷ সন্ধে নামতে হাওড়া-রাঁচি এক্সপ্রেস পৌঁছল পুরুলিয়া৷ রাত কাটিয়ে সকালেই টাটা সুমো নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম অযোধ্যার পথে৷ হিলটপের সরকারি অতিথিশালায় টিফিন খেলাম বেশ তৃপ্তি করে৷ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চারপাশ৷ মনটা খুশ হয়ে গেল৷ বাচ্চারা দৌড়চ্ছে যে যার মতো৷ আমরা ক্যামেরা বন্দি করছি নিজেদের৷ ঘণ্টা খানেক এখানে কাটিয়ে পৌঁছলাম ময়ূর পাহাড়৷ চারপাশে জঙ্গল-পাহাড়ে ঘেরা ময়ূর পাহাড় মন ভরালো৷

কন্যার সঙ্গে আমরা।

ময়ূর পাহাড়ের পর্ব শেষ করে গাড়ি ছুটল বামনি ফলস৷ রাস্তা বেশ খারাপ৷ অসংখ্য পর্যটক, তবু প্রশাসন নির্বিকার৷ একটু পথ, কষ্ট অনেক৷ তবে বামনি দেখে খানিকটা কষ্ট লাঘব হল ঠিক, কিন্তু খিদেতে তখন চোখে সর্ষে ফুল৷ জানা গেল, কাছাকাছি কোথাও হোটেল নেই৷ অগত্যা পরের গন্তব্য আপার ড্যাম৷ আপার ড্যাম সত্যি অপূর্ব৷ চারপাশে পাহাড় মাঝখানে জলাশয়৷ খানিকটা সময় সেখানে কাটিয়ে ঝাঁ চকচকে রাস্তা দিয়ে আমরা পৌঁছলাম লোয়ার ড্যাম৷ দেখলাম হাইড্রলিক্স পাওয়ার প্রজেক্ট৷ কিন্তু খিদের চোটে এখানে বেশি সময় না দিয়ে গাড়ি ছুটলো বাঘমুন্ডি৷ সেখানে পৌঁছেই আগে সারলাম লাঞ্চ৷

ধারাপ্রপাত।

তারপর গেলাম মুখোশ গ্রাম চরিদা৷ জয়ন্ত কিনল কয়েকটা মুখোশ৷ দেখলাম ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে কতরকমের মুখোশ৷ দুর্গা, লক্ষ্মী, কালী, গণেশ, কৃষ্ণ আরও কত কী৷ তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে৷ গাড়ি ছোটে পুরুলিয়া শহরের পথে ৷ আমাদের চোখ বুজে আসে…।

ড্যাম দর্শন।

ছবি— লেখক

(সমাপ্ত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *