অন্য সফর বিশেষ ভ্রমণ

কেকার কথা শুনুন, খেতে দিন

খেতে পাচ্ছে না রাজহাটের ময়ূরগুলো। উপেনদা মানে উপেন কল্যা খাবার জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছেন। হুগলি জেলার পোলবা থানার গাঁন্ধীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা রাজহাট। সেখানে প্রায় শ’আড়াই ময়ূর থাকে। প্রকৃতির মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। উড়ে বেড়ায়। ডিম পাড়ে। বাচ্চা হয়। আপন মনে থাকে।

কিন্তু সম্প্রতি ময়ূরগুলোর খাবারে টান পড়েছে। উপেনদা ময়ূরগুলোর খাবার জোগান দিতে পারছেন না। মানে পেরে উঠছেন না। রক্ষাও করতে পারছেন না পাখিগুলোকে। কুকুরে মেরে দিচ্ছে। শিয়ালে খাচ্ছে। ডিম খেয়ে নিচ্ছে গোসাপে। আর আছে কিছু ভ্রমণ পিপাসু নামে ভয়ঙ্কর জাতি। যারা সব কিছু হাতে ধরে দেখতে চায়। নিজস্বী তুলতে চায়। তারা ময়ূরদের তাড়া করে। পালক ছিঁড়ে নেয়। কাঁচা পালক ছেঁড়ায় রক্তপাত হয় ময়ূরের। তার পর সেখানে সংক্রমণ হয়ে মারা যায়।

উপেনদার বাড়িতে অসুস্থ ময়ূর। এদের চিকিৎসা করান উপেনদা।

এ সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে খিদের। খাবারের খোঁজে ময়ূরগুলো এখন ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দিকে। কারণ উপেনদা বিভিন্ন জনের থেকে চেয়েচিন্তে খাবার জোগাড় করে উঠতে পারছেন না। সরকারি ভাবে কোনও সাহায্য মেলেনি। কিছুদিন আগে কুন্তী নদীর সংস্কার হয়েছে। মাটি কাটার ভারী ভারী যন্ত্রগুলোর আওয়াজে বিরক্ত হয়েও ময়ূর পালিয়েছে। নদী সংস্কারের ফলে আরেকটা সর্বনাশ হয়েছে। নদীর পাড়ের বনজঙ্গল সাফ হয়ে গিয়েছে। তাতে পোকামাকড় কমেছে। ময়ূরগুলোর খাবার নষ্ট হয়েছে। নদী সংস্কার করার হয়তো দরকার ছিল। কিন্তু ময়ূরদেরও তো বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।

সংস্কারের ফলে সাফসুতরো কুন্তী নদীর পাড়।

বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। কখনও বন্ধুদের অনুরোধ করে গম জোগাড় করছেন। কখনও অসুস্থ ময়ূরকে সেবা করছেন। তাঁকে সাহায্য করেন ব্লকের প্রাণী স্বাস্থ্য আধিকারিক তপনবাবু। আগে করতেন সুদর্শনবাবু। যিনি ডুয়ার্সে বন্যপ্রাণ রক্ষার অভিজ্ঞতা নিয়ে এই অঞ্চলে এসেছিলেন।

এমন ভাবেই আনন্দে বাঁচুক রাজহাটের ময়ূর।

আপনারাও যদি সাহায্য করেন সুন্দর প্রাণীগুলো বেঁচে থাকতে পারে। না, টাকা পয়সা চান না উপেনদা। অনুরোধ করেন, ময়ূর দেখতে এলে কিছু গম যেন তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যান। রেশন দোকান ঝাঁট দিয়ে গম হলেও চলবে। ময়ূর ময়লা থেকে বেছে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।

উপেনদার নম্বর—9831117332

2 thoughts on “কেকার কথা শুনুন, খেতে দিন

    1. আপনি ব্যান্ডেল স্টেশনে নামবেন। তার পর স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে রাজহাট, গাঁধীগ্রামের অটো ধরবেন। সেখান থেকে হেঁটে মিনিট দশেক গেলে ডিএড কলেজ। ওখানে উপেন কল্যার নাম বললে যে কেউ বাড়ি দেখিয়ে দেবেন।

Leave a Reply to Prasun Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *