ইতিহাস ছুঁয়ে বিশেষ ভ্রমণ

হারানো সুশি, বঁড়শি আর মিষ্টির ধনিয়াখালি

নন্দিতা দাস

সপ্তমীর সকাল। একে তো চারিদিকে করোনাসুরের দাপাদাপি। তার ওপর সকাল থেকেই আকাশের মুখভার। দু’এক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। কিন্তু যাদের পায়ের তলায় সর্ষে তাদের কি আর এসব দিয়ে দমিয়ে রাখা যায়! বেশ দু’তিনদিন ধরেই দেখছিলাম বাতাসে ঘুরতে যাওয়া-ঘুরতে যাওয়া গন্ধ। ভাইস কাপ্তেন সাহেব ফোনাফুনিতে ব্যস্ত। কাজেই দলে ভিড়ে পড়ার ফিকির খুঁজতে হয়। তা সেসব নিয়ে বেশি বেগ পেতে হল না অবশ্য। কাপ্তেন সাহেবের নির্দেশ ছিলই। অতএব যাত্রামঙ্গল সুনিশ্চিত। সক্কাল-সক্কাল মাস্ক-স্যানিটাইজার-বর্ষাতির রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে রওনা দিলাম পঞ্চপাণ্ডব, বড়দা(দীপক দাস), ইন্দ্রদা (ইন্দ্রজিৎ সাউ), বাবলাদা (বিভাস বাগ), ভাইস কাপ্তেন সাহেব (দীপশেখর দাস) আর আমি। গন্তব্য পাশের জেলা হুগলির ধনিয়াখালি। ধনিয়াখালির তাঁতের শাড়ি আর খইচুরের খোঁজে।

জগৎবল্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয় পেরিয়ে ডানদিকে বাঁক নিতেই চেনা জগতের বাইরে চলে এলাম আমি। নতুন রাস্তা। এদিকে আসিনি কখনও। মায়তাপুকুর পেরিয়ে খানিক এগিয়েই অবশ্য থামতে হল। জায়গাটার নাম দেখলাম হলদিপুকুর। সেখানে সে এক ভয়াবহ দৃশ্য। রাস্তার দু’পাশে মৃতদেহের সারি। গাছেদের। বড় বড় গাছ। কিন্তু সবাই মৃত। ডালপালা শুকিয়ে গিয়েছে। রয়ে গিয়েছে কেবল কঙ্কালসার কাণ্ডগুলো। দলের বটানিস্ট আমার অগ্রজ দীপশেখর জানালেন, কোনও প্রাকৃতিক কারণে এটা হয়নি। গাছগুলোকে বিষ দিয়ে মারা হয়েছে।

মৃত গাছের সারি।

শুরুতেই এরকম একটা দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল একটু। যদিও তখনও ভাবিনি সারা রাস্তা জুড়েই গাছেদের গণহত্যা দেখতে দেখতে যেতে হবে। যাই হোক, আবার রওনা দিলাম। তার পর একে একে পেরিয়ে এলাম মুন্ডলিকা-ফুরফুরা শরিফ-শিয়াখালা-নালিকুল-বলদবাঁধ-অলিপুর-ভাণ্ডারহাটি। সবক’টিই মনে হয় প্রাচীন জনপদ। ভাণ্ডারহাটির অনেকটা এলাকা জুড়ে পুরনো পুরনো বাড়ি চোখে পড়ল। প্রাচীন দুর্গাদালান। তার সামনে রাসমঞ্চও দেখলাম। কিন্তু থামা হয়নি। একটা স্কুল দেখলাম, বি এম হাইস্কুল। গায়ে লেখা আছে স্থাপিত, ১৮৯৪। কত বছর আগে থেকে শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত একটি গ্রাম! দেখেও ভাল লাগল। রাস্তার দু’ধারে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। তবে আর একটা জিনিস যা বেশি করে চোখে পড়ে তা হল হিমঘর। অজস্র। হুগলিতে ভাল মতো চাষ হয়। ধান-আলু-নানা রকম আনাজ।

ভাণ্ডারহাটি পেরিয়ে আমরা এসে দাঁড়ালাম একটা ফাঁকা জায়গায়। ক্ষণিক বিশ্রামের জন্য। এখানেও দু’ধারে ধানক্ষেত। এসে দাঁড়ানো ইস্তক একটা চিরিক-চিরিক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভেবেছিলাম কোনও পাখির ডাক। কিন্তু বড়দার প্রশ্নে জানা গেল ওটা বিদ্যুতের তারের আওয়াজ। ধানক্ষেতের ওপর দিয়ে গিয়েছে হাই টেনশন বিদ্যুতের লাইন। জায়গাটা বেশ। দাঁড়ানো যখন হয়েইছে তখন ছবি তো তুলতেই হয়। কিন্তু ছবি তুলতে গিয়ে সে এক বিপত্তি। রাস্তা দিয়ে কয়েকজন যাচ্ছিলেন। বেশ বোঝা যায়, সপ্তমীর সকালে বেশ ছুটির মুডে রয়েছেন। ফলে কিঞ্চিৎ সেবন। তার ফলেই বায়নাক্কা। আমাদের ছবি তুলতে দেখে তাদেরও পোজ দিতে ইচ্ছে করল। ছবি তুলে দিতেই হবে। নাছোড়বান্দা। একজন ধানজমির আলে গিয়ে অষ্টাবক্র মুনি হয়ে ছবি তোলালেন। আরেকজন রাস্তার উপরেই।

বাংলার এমন মুখই বারবার দেখেছি সেদিন।

খানকতক ছবি তুলে আমরাও চললুম আবার। এবারে সোজা ধনিয়াখালি বাজার। এসে তো পড়লাম। আমাদের লক্ষ্য তাঁতের শাড়ির হদিস। আর সেই ধনিয়াখালির বিখ্যাত খইচুর। কিন্তু এবার যাব কোনদিকে? অগত্যা পথের হদিস পেতে বাজার ছাড়িয়ে ডানদিকে এগোলাম আমরা। তালবোনা গ্রামে যাওয়ার রাস্তার ঠিক মাথায় একটা মুদি দোকান চোখে পড়ল। ভারী ভাল দোকানের ভদ্রলোক। তিনি বললেন, আমরা কিছুটা এগিয়ে এসেছি। বুঝিয়ে দিলেন, কোন কোন গ্রামে গেলে ধনিয়াখালির তাঁতের খোঁজ পাব। তার পরে জানালেন, তাঁত শিল্পীদের কোনও সমবায় সমিতিতে গেলেই ভাল। ওঁরা সবকিছু গুছিয়ে বলতে পারবেন। তাঁতিদেরও সন্ধান দিতে পারবেন। কথা বলতে বলতেই দোকানদারের দাদা উপস্থিত। আমরা তাঁর সঙ্গে পুরনো দিনের গল্প জুড়ে দিয়েছি। সে সব ধনিয়াখালির সমৃদ্ধির ইতিহাস। যে ইতিহাস বারবার আমাদের চমকে দেবে। রাস্তা জেনে ইউ-টার্ন নিয়ে হাজির হলাম ‘ধনিয়াখালি ইউনিয়ন তাঁতশিল্পী সমবায় সমিতি লিমিটেড’এ। ধনিয়াখালি বাজার থেকে ডান হাতি রাস্তায় একটুখানি। বেশ বড় একটা ঘর মতোন। কাচের শোকেস ভর্তি তাঁতের শাড়ি। এখান থেকেই বেচাকেনা চলে। ওখানে পাওয়া গেল সমিতির সদস্য শ্রী গোবিন্দ বীট মহাশয়কে। ওঁর কাছ থেকেই জানতে পারলাম, ধনিয়াখালি বা ধনেখালির তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে এখানে তিনটি সমবায় সমিতি করা হয়েছে। প্রতিটি সমিতির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কয়েকটি গ্রাম। আমরা যে সমিতিতে হাজির হয়েছিলাম সেটির অধীনে সাতটি গ্রাম রয়েছে— ধনিয়াখালি, মামুদপুর, ধনরাজপুর, মির্জানগর, মহামায়া, বোসো এবং পায়েসা। বড়দার কথায়, “আহা! নামগুলোই কী মিষ্টি।’’

দু’দণ্ড বসিবার তরেই এমন প্রকৃতি।

ভদ্রলোক প্রথমে বোধকরি আমাদের খরিদ্দার ভেবেছিলেন। তবে আমাদের প্রশ্নের ঠেলায় তাঁর সে ভ্রম দূর হতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি। আমাদের জানার আগ্রহ দেখে উনি নিজেই সমিতির ইতিহাস-কার্যপদ্ধতি সম্বন্ধে আমাদের অনেক কিছু জানালেন। জানালেন তাঁতশিল্পের দুর্দশার কথাও। ব্রিটিশ ভারতে বাংলার তাঁত ও তাঁতশিল্পীদের দুঃখ-কষ্টের বর্ণনায় বাংলার ইতিহাস ও সাহিত্য সমৃদ্ধ। স্বাধীনোত্তর ভারতে সেই ছবির যে খুব একটা বদল হয়নি সেটা হয়তো এখানে না এলে কখনও জানাই হত না। তবে কিছুটা বদল তো অবশ্যই হয়েছে। মহাজনদের অত্যাচার থেকে তাঁতশিল্পীদের রেহাই দিয়েছে ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হওয়া এই সমিতি। ওই সাতটি গ্রামের সকল তাঁতশিল্পী সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত। সমবায় থেকে তাঁদের যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হয়। সমিতি থেকেই তাঁদের সুতো দেওয়া হয়। তৈরি শাড়িগুলো তন্তুজ, মঞ্জুশ্রী, বঙ্গশ্রীর মতো প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়। এছাড়া সমিতির সদস্যরা প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাটুইটি ফান্ড, বোনাস ইত্যাদির সুবিধাও পান। তবে সমস্যা হল বাজারে প্রতিযোগিতা বেশি। সেই সঙ্গে আছে ‘নকল’ ধনেখালি তাঁতের বাড়বাড়ন্ত। অনেকেই না জেনে ঠকেন। গোবিন্দবাবু আমাদের আসল ধনেখালি তাঁত চেনার উপায়ও বলে দিলেন। ধনেখালি তাঁতের ট্রেডমার্ক-আঁচলের ওপরে অতিদক্ষতায় সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা ধানের শীষের কারুকার্য। আর কয়েকটি সুতোর লাইন। যা কেবল এখানকার তন্তুবায়রাই করতে পারেন।

আমাদের ছবি তোলা দেখে ইনিও পোজ দিলেন।

গোবিন্দবাবু নিজেও তাঁত বুনতেন একসময়। এখন উনি সমবায়ের সদস্য। এত সব শোনালেন আমাদের। সেই সঙ্গে আফসোসও ছিল হয়তো তার গলায়। আসলে যুগ বদলেছে। এখন মানুষ সব চটজলদি হাতে পেতে চায়। তাঁতবোনা যেমন কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ সেই হিসেবে কিন্তু টাকাপয়সা পাওয়া যায় না। ফলে নতুন প্রজন্মের অনেকেই অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। তার উপর এ বছর লকডাউন ও করোনা অতিমারির কারণে সমস্যা আরোই প্রকট হয়েছে। শোকেসগুলো দেখালেন তিনি। বললেন, ‘‘অন্য বছর সপ্তমীর দিনে সব ফাঁকা হয়ে যায়। এবার বাজার একেবারে মন্দা। তন্তুজ, বঙ্গশ্রীর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক লক্ষ টাকার শাড়ি কেনে প্রতি বছর। এ বছর কেউ বরাত দেননি।’’ একটি প্রতিষ্ঠান কিছু টাকার বরাত দিয়েছিল।

এদিকে গল্প শুনতে শুনতেই শাড়ি বাছাবাছি চলছিল। দাদারা সব বাড়ির জন্য শাড়ি নেবে। কেন জানি না ওদের মনে হয়েছে আমি শাড়ির ব্যাপার ভাল বুঝব। সবাই মিলে ধরেছে আমায়, “নন্দি, শাড়ি পছন্দ করে দে।’’ এদিকে আমার যে শাড়ি নামক জিনিসটার সঙ্গে কোনোরকম কোনও সম্পর্ক নেই কেউ বুঝতেই চাইছে না। অবশেষে ভ্রাতৃদেব এলেন উদ্ধারকার্যে। আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলুম।

সমিতিতে ধনেখালির তাঁতের শাড়ি সম্ভারের মাঝে গোবিন্দবাবু।

শাড়ি কেনার পর ঠিক হল সাতটা গ্রামের মধ্যে একটায় ঘুরে আসা যাক। সমিতির লোকজনের পরামর্শ মেনে আমরা গেলাম কাছের মামুদপুর গ্রামে। গ্রামের দুর্গামণ্ডপে তখন দ্বিপ্রাহরিক আড্ডা চলছিল। আমরা গিয়ে তাঁত দেখার অনুরোধ করাতে একজন নিয়ে গেলেন তাঁর বাড়ি। বাড়ির সামনেটা একটু দালানকোঠা মতো। সেটা পেরোলেই উঠোন। সামনে একটা টিনের চালের ঘর। তার পিছনে টালির চালের ছোট্ট মতো বাড়ি। সামনের ঘরটায় তাঁতটা রাখা। তাতে অর্ধসমাপ্ত একটা শাড়ি। যিনি নিয়ে এলেন সঙ্গে করে ওঁর নাম রামপ্রসাদ দত্ত। তাঁত বুনছেন প্রায় ১৬ বছর। তার সঙ্গে কিছু জমিজমা চাষ করে আর গাড়ি চালিয়ে কোনও মতে সংসার চলে। তাঁতের কাজের মজুরি বড্ড কম। বলছিলেন সমবায় হয়ে সুতোটা কিনতে হয় না ঠিকই। তা-ও হাতে টাকা সেরকম থাকে না। কারণ একটা শাড়ি বুনতে সময় লাগে অনেক। টানা কাজ করলে ঘণ্টায় মাত্র এক হাত শাড়ি বোনা যায়। সপ্তাহে ৩টে থেকে ৪টে। শাড়ির রং ও নকশার উপর মজুরি নির্ভর করে। এক একটা শাড়ির জন্য সর্বোচ্চ ২০০ টাকা মজুরি পাওয়া যেতে পারে। আরও বললেন তাঁতযন্ত্রে শাড়ির নকশা পাল্টাতে সময় লাগে ১৫ দিন। ওই ক’দিন কাজ বন্ধ থাকায় কোনও টাকা পাওয়া যায় না। শুনছিলাম ওঁর কথা। শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পের মদন তাঁতি বুঝি সামনে এসে দাঁড়াল। কিন্তু কীই বা করার আছে আমাদের চুপ করে শুনে যাওয়া ছাড়া।

তাঁতের সামনে রামপ্রসাদ দত্ত।

হাঁটতে হাঁটতে, ফিরতে ফিরতে, ধান জমির মাঝের পাকা রাস্তায় খেতে খেতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম। তাঁতশিল্পের এই যে মন্দা এর কারণ কী? অনেক কারণ আলোচনায় উঠে এল। পরে সুধীরকুমার মিত্রের হুগলি জেলার ইতিহাস পড়া হল। তখন মনে হল, আর কোনও কারণকেই দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাঁতশিল্পের এই মন্দার মূল কারণ একটাই, সময়। হুগলির ধনেখালি, তারকেশ্বর, বিশাল বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। বিশেষ করে বস্ত্র শিল্পে বেশ উন্নত ছিল। ধনেখালির তাঁতের শাড়ি ছিল ভারত বিখ্যাত। ইংরেজ আমলেও এর রমরমা ছিল। বহু দূর থেকে সওদাগরেরা বাণিজ্য করতে আসতেন। এখানকার খাল, গড় বা দহগুলো সেই সমৃদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্রের প্রমাণ দেয় বলে মনে করেছেন সুধীরকুমার মিত্র। তাঁতের জন্য ধনেখালির এখনও সুনাম রয়েছে। একসময়ে সুশি আর শিশক্কর-এর জন্য বিখ্যাত ছিল। এগুলো একধরনের লুঙ্গি জাতীয় রেশমের কাপড়। লাক্ষাদ্বীপ ও মালদ্বীপে চালান যেত। এই দুই ধরনের রেশম বস্ত্র রফতানি করে এলাকায় প্রচুর অর্থ আসত। কিন্তু সুশি আর শিশক্কর তৈরি বহুদিন হল বন্ধ হয়েছে।

সুতো কাটার চরকা।

ধনেখালি আরও দু’টো জিনিসের জন্য বিখ্যাত ছিল। বঁড়শি আর খইচুর। আমাদের দলের বাবলাদা নামী মৎস্যশিকারি। ও ধনেখালির বঁড়শির নাম জানত। সমিতিতেই শুনেছিলাম, এখন আর কাঁটা তৈরি হয় না। কর্মকাররা অনেকদিন এ কাজ ছেড়েছেন। তবুও বাবলাদা, ইন্দ্রদা আর বড়দা মিলে একটা বাজারে ঢুকল। ফিরে এসে জানাল, ধনেখালিকে এখন মাছের কাঁটা সরবরাহ করে বাঁকুড়া। ধনেখালির বঁড়শির দিন গিয়াছে।

দিন গিয়াছে খইচুরেরও। বাংলার প্রাচীন মিষ্টিগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের দল মোট তিন জায়গায় খইচুরের সন্ধান পেয়েছে। আমাদের হাওড়ার মাজুতে। হুগলির খানাকুলে আর ধনেখালিতে। কিন্তু তিন জায়গাতেই তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ধনেখালির খইচুরেরও একসময় প্রচুর নাম ছিল। প্রায় ৫০ রকম মশলা লাগত খইচুর তৈরি করতে। রামকৃষ্ণদেব ধনেখালির খইচুর খেয়েছিলেন। মিষ্টির দোকানে জিজ্ঞাসা করেছিল বড়দা। কিন্তু সব উত্তরই নেতিবাচক।

ভারী কষ্ট হল। এক ইতিহাস খ্যাত জনপদ ধীরে ধীরে কেমন সময়ের কাছে হার মেনেছে। গর্ব করার মতো সব হারিয়েছে।

কভারের ছবি— ধনেখালির তাঁতের শাড়ি।

ছবি— বিভাস বাগ (বাবলা), দীপশেখর দাস ও ইন্দ্রজিৎ সাউ।

(সমাপ্ত)

2 thoughts on “হারানো সুশি, বঁড়শি আর মিষ্টির ধনিয়াখালি

  1. খুব খারাপ লেগেছে গৌরব হারানো এক জনপদে গিয়ে। একটা দু:খবোধ সবসময় কাজ করেছে। মানুষের জীবনের মতোই এলাকারও উত্থান-পতন আছে। সময়ের বিপুল ভার।

    1. সত্যি খুবই খারাপ লাগে ভাবলে যে এভাবেই কালের স্রোতে বাংলার একের পর এক সমৃদ্ধ কুটিরশিল্প আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে!

Leave a Reply to Nandita Das Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *