তিব্বতি খাবার
খাদ্য সফর বিশেষ ভ্রমণ

আহারে বিহারে— শ্যাফলে

ডঃ শ্রাবনী চ্যাটার্জি

‘দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে’…।

দূ…উ…উ…র থেকে টুক করে পাহাড়ের চুড়ো যেই চোখে পড়ল ওমনি প্রাণটা মোমো মোমো করতে লাগল। স্টিম, ফ্রাই, চিলি হরেকরকম মোমো মন কাড়ার জন্য স্বাদের পসরা সাজিয়ে বসে আছে। আর শুধু পাহাড়ে বেড়াতে গেলেই বা কেন এমনি এমনি, শীত শীত আবহাওয়ায় মোমোর আকর্ষণী শক্তি বেড়ে যায়। কিন্তু আজ মোমোর গল্প বলতে আসিনি। সে গল্প আপনারা জানেন। আজ বলি মোমোর এক জাত ভাইয়ের গল্প। যাকে দেখতে মোমোর মতো। কিন্তু স্বাদ একদম আলাদা, নাম শ্যাফলে।

টেবিলে হাজির শ্যাফলে।

শ্যাফলে বা শাফলে আদতে তিব্বতি খাবার। ময়দার খোল বানিয়ে তার মধ্যে মাংস বা আনাজের পুর ভরে আধখানা চাঁদের মতো বা বলা ভাল আমাদের পুলিপিঠের মতো আকার করে নেওয়া। তার পর সেটাকে বেশ করে ভেজে পরিবেশন করা হয়। পুরের মধ্যে বেশ মশলাটশলা দিয়ে দিব্বি স্বাদ আনা হয়। এবার এই যে পুর সে কিন্তু হরেক কিসিমের হতে পারে। এখন আমার মতো নাক উঁচু লোকের সুবাদে মুরগির মাংসের পুর দেওয়া হলেও এতে গোমাংস বা শুকরের মাংসের পুর দেওয়াই দস্তুর। নিরামিষ হিসেবে বাঁধাকপিও দেওয়া চলে। এই শুনে আবার আমার দিকে রে রে করে তেড়ে আসবেন না দয়া করে। মাংস নিয়ে এই ছুঁৎমার্গ অনেক হাল আমলের। খাবারে এত ভাগাভাগি আগে ছিল না।

লোভনীয় শ্যাফলে।

তবে মুরগির মাংসের শ্যাফলেও কিন্তু দুর্দান্ত স্বাদের হয়। হলফ করে বলতে পারি। যে কোনও তিব্বতি খাবারের দোকানেই এই জনপ্রিয় চেনা হয়েও অচেনা পদটি পাবেন। তবে যদি গ্যাংটক বেড়াতে যান তা হলে কিন্তু একটা সন্ধে ‘টেস্ট অব টিবেট’এ যাওয়া চাই। এখানে শ্যাফলে, থুকপা-সহ বিভিন্ন রকম তিব্বতি খাবার অতি সুস্বাদু। করে এখানে পরিবেশিত হয়। এম জি মার্গে ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে ঢুকে পড়তেই পারেন এখানে। বাইরের ঠান্ডায় গরম গরম মুচমুচে শ্যাফলে পেট আর মন দুইই ভরিয়ে দেবে।

ছবি- লেখিকা

(সমাপ্ত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *