অন্য সফর বিশেষ ভ্রমণ

ইতিউতি হাওড়ার জীবজগৎ— পঞ্চম পর্ব

যথা ইচ্ছা তথা যা

আরও কিছু ছবি জোগাড় করা গিয়েছে। তাই সেগুলো আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।

১। গুবরে পোকা আর জাল

মৃত্যুফাঁদ পাতা ছিল সামনেই।

এখন বিভিন্ন জায়গাতেই ফসল বাঁচাতে জালের ব্যবহার করা হয়। জলাশয়ের মাছ বাঁচাতে জাল। মাঠের ফসল বাঁচাতেও জাল। ফলে পাখি আর প্রাণী উভয়েরই মৃত্যু হয়। সেদিন পাতিহালের মাঠে দেখা গেল, সরষে বাঁচাতে মাঠ জাল দিয়ে ঘেরা। তাতে একটা বড়সড় গুবরে পোকা আটকে মরে আছে।

২। কাঠঠোকরা

খাবারের খোঁজে।

আগে এক ধরনের কাঠঠোকরা মিলেছিল। দাগি কাঠঠোকরা। এবার মিলল মাথায় লাল ফুলকি দেওয়া কাঠঠোকরা। বেশকিছু দেখা যাচ্ছে পাতিহালে। পাখিপ্রেমিক সৌম্য চট্টোপাধ্যায় জানালেন, এটি সোনালি কাঠঠোকরা। পিঠের ওই উজ্জ্বল কমলাটে রঙের জন্যে এমন নাম।

৩। দুর্গা টুনটুনি

রূপবান তিনি।

টুনটুনি পরিবারের সবচেয়ে সুন্দর লাগে এই পাখিটিকেই। গায়ের রঙ রাজকীয় বলে মনে হয়। অনেকবার অনেক জায়গায় দেখেছি আমরা। শেষে ক্যামেরা বন্দি করেছি পাতিহালেই। পাখিপ্রেমিক সৌম্য চট্টোপাধ্যায়ের সংযোজন, দুর্গা টুনটুনির অন্য আরেকটা নাম নীলটুনি বা পার্পল সান বার্ড। পুরুষ পাখির ঝলমলে নীল রঙের জন্যে। আমেরিকায় যেমন হামিং বার্ড, আমাদেরও তেমন সান বার্ড।

৪। সম্ভবত বাজ

ক্যামেরা তাক করতেই সন্দেহ শুরু।

পাতিহালে খানদুয়েক লক্ষ্য করা গিয়েছে। এক ধরনের শিকারি পাখি, এটা বুঝতে পারা গিয়েছে। কারণ এই পাখিটা এলেই বাকি পাখিরা ঝটপটিয়ে উড়ে পালায়। কিন্তু কী প্রজাতির, তা সঠিক জানি না।

একই গোত্রের নিশ্চয়?

অনেক কষ্টে ভাঙা ক্যামেরায় দুটো ছবি তোলা গিয়েছে। আপনারা কেউ চিনতে সাহায্য করলে আমরাও চিনব। শিকারি পাখিটি সম্ভবত শিকরা, ইন্ডিয়ান স্পারো হক। বাজ গোত্রের বলে শিকরে বাজও বলে। জানালেন পাখিপ্রেমিক সৌম্য চট্টোপাধ্যায়।

৬। ছদ্মবেশী প্রজাপতি

লুকিয়ে আছে কেমন সুন্দর!

কিছুতেই আলাদা করা যাচ্ছিল না শুকনো পাতার সঙ্গে। ক্যামেরা তাক করলেই উড়ে গিয়ে বসে অন্য জায়গায়। তার পর আর খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রজাপতিটির প্রকৃত নাম জানা নেই। ইংরেজি, বাংলা কোনওটাই নয়। প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ সৌরভ দুয়ারী জানালেন, প্রজাপতিটি ‘কমন ইভনিং ব্রাউন’।

৭। কুবো পাখি

ছায়াছবি হয়ে গিয়েছে।

ছোটবেলায় বাঁশবাগানে প্রচুর দেখতাম। খুব বেশি উড়ত না। মাটিতেই চরে বেড়াত। আর কুব কুব কুব করে ডাকত। আমাদের ছোটদের কেউ বলত কোকিল। কেউ বলত পাতকো পাখি। পরে জেনেছি কুবো পাখি। অনেকদিন ধরে ছবি তোলার চেষ্টা করলেও কিছুতেই ক্যামেরার নাগালে আনা যায়নি। তাক করলেই পালিয়ে যায়। কোনও মতে একটা ছবি তোলা গিয়েছিল। কিন্তু তা সূর্যের দিকে হওয়ায় শনাক্তকরণ করার মতো হয়নি ছবিটি।

৮। বসন্তবৌরি বড়

বাথটাবে।

পাতিহালে বেশ কয়েকটি দেখা যায়। পাতিহালে এক বাড়িতে কামরাঙা গাছে প্রতিদিন দুপুরবেলা ফল খেতে আসে। মাঝে মাঝে সরায় রাখা জল খেয়ে যায়।

৯। বসন্তবৌরি ছোট

কামরাঙা গাছে।

অসাধারণ দেখতে। মনোমুগ্ধকর। ওই কামরাঙা গাছেই মিলেছিল ছোট বসন্তবৌরিকেও। এই বসন্তবৌরির বাংলা নাম নীলগলা বসন্তবৌরি, ইংরিজিতে ব্লু-থ্রোটেড বারবেট বলে। জানাচ্ছেন সৌম্য।

কভারের ছবি- দুর্গা টুনটুনি

(চলব)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *