অন্য সফর

চল মন পাগল খুঁজি

দীপক দাস

গল্পটা সবাই জানেন।

একবার সম্রাট আকবর সভাসদ বীরবলকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন পাঁচজন পাগল খুঁজে আনার। রাজ আজ্ঞা পালনে বাধ্য বীরবল বেরিয়ে পড়েছিলেন। খুঁজছেন, খুঁজছেন। হঠাৎ দেখেন, একটা লোক আঁতিপাতি করে কী যেন খুঁজছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। লোকটি জানাল, ‘সোনার আংটি খুঁজছি। এখানে পুঁতে রেখেছিলুম।’ বীরবল জানতে চান, ‘কোনও চিহ্ন দিয়ে রাখোনি?’ লোকটা বলল, ‘হ্যাঁ। আকাশে একখানা মেঘ ছিল। ঠিক তার নীচে রেখেছিলুম।’ বীরবল তার নাম-ধাম টুকে নিলেন। যে লোক উড়নউন্মুখ মেঘকে চিহ্ন করে সে পাগল ছাড়া কী!

আবার খোঁজ। এবার দেখলেন, একজন ঘোড়া হাঁকিয়ে চলেছে। লোকটার মাথায় ঘাসের থলি। রসরাজ তাকে থামিয়ে জানতে চাইলেন, ‘থলিটা ঘোড়ার পিঠে রাখছ না কেন?’ লোকটার চটজলদি জবাব, ‘ঘোড়ার ওপরে চাপ পড়বে না? লাগবে ওর।’ বীরবলের খাতাবন্দি হল লোকটার নাম। আরেকজনকে পেলেন তিনি। সেই লোকটা কাদায় পড়ে দু’হাত আকাশের দিকে তুলে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করছে। রাজবিদূষক তার হাত ধরে তুলতে গেলেন। কিন্তু লোকটা প্রবল আপত্তি জানিয়ে বলল, ‘হাত নয়। চুল ধরে তোলো।’ বীরবল তাই করলেন। তারপর চুল ধরে তুলতে বলার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। লোকটার জবাব, ‘বউ আলমারির মাপ বলে দিয়েছিল। সেটাই দু’হাতে মেপে নিয়ে যাচ্ছিলুম। হাত ধরে তুললে মাপ নষ্ট হয়ে যেত না।’ কাদায় পড়ে যে সে মাপ নড়ে গিয়েছে সেটা না জানিয়ে লোকটার নাম টুকে নিলেন বীরবল।..

দুই

মছলন্দপুর নামটার উৎপত্তি কী? ২৬ জানুয়ারি। শিয়ালদহ থেকে ফাঁকা বনগাঁ লোকাল। খুব আনন্দ। যাচ্ছি মছলন্দপুর। আমি আর ইন্দ্র। ফাঁকা লোকালে তাই ইতিহাসচর্চা। কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছনো গেল না। একবার মনে হল, মছলি মানে মাছ থেকে উদ্ভব। মশলা থেকেও হতে পারে। নামের উৎস সন্ধানে কতটা গাড়ল ছিলাম সেটা প্রমাণ হল লেখার সময়। সহকর্মী কিন্তু বন্ধু (প্রবাদে বলে সহকর্মীরা বন্ধু হয় না) সৌমিত্র বলল, মছলন্দপুর নামটা মাদুর থেকে আসতে পারে। একসময় ওই এলাকায় মাদুর বিখ্যাত ছিল। কিন্তু আমার সংশয় ‘পুর’ শব্দে। পুর মানে তো বাড়ি। যেমন, কিড সাহেবের পুর থেকে খিদিরপুর, সন্তোষ নামে কোনও একজনের পুর থেকে সন্তোষপুর, বারুইদের বাসভূমি, বারুইপুর।

মনে পড়ল আরেক সহকর্মী উজ্জ্বলের কথা। ওর বাড়ি মছলন্দপুরের পরে স্টেশন। উজ্জ্বলকে দিনকতক খোঁচাতে সে-ও মাদুরের দিকে ভোট দিল। কী মনে হতে ‘চলন্তিকা’ আর ‘সরল বাঙ্গালা অভিধান’ দেখে নিশ্চিন্দি, মসলন্দ মানে মাদুর। মছলন্দপুর বানানটা ভুল।

ভাবনাচিন্তার ফাঁকেই দু’টো স্টেশন পার। আর বনগাঁ লোকাল স্বরূপে। ভিড়াক্কার। জানলার ধারে সিট। কিন্তু লোকে তা-ও হাঁটুর উপরে উঠে আসতে চায়। বিরক্ত লাগছিল একটু। নিত্যযাত্রীদের রোজকারের কষ্টের কথা ভেবে উদার হলাম। লোকের বেড়ায় ইন্দ্র আড়ালে। ফলে কথা বন্ধ। ফলে ঝিমুনি। তখনই কাকার ফোনটা এল। কাকা মানে শুভদীপ। আমার আরেক সহকর্মী। এই কাকাই সন্ধান দিয়েছিল মসলন্দপুরের এক বাসিন্দার। যিনি প্রতি বছর শীতকালে এলাকার পাগলদের নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করেন।…ঝিমোত ঝিমোতে, সবুজ ঘেরা গাঁ-গঞ্জ, একদল কলেজ পড়ুয়ার উচ্ছ্বল তারুণ্যের সংলাপ উপভোগ করতে করতে পৌঁছে গেলাম মসলন্দপুর।

স্টেশনটা তেমন টানল না। কেমন যেন একটা ঘেরাটোপ ব্যাপার। কিন্তু যখন অরবিন্দ রোডের টোটো ধরলাম, মন ভরে গেল। লোকজন, গাড়িঘোড়া, কংক্রিটের জঙ্গলে জমজমাট। কিন্তু তার মাঝেও প্রচুর সবুজ। প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনে এক চিলতে খোলা জমি। তাতে কোনও না কোনও গাছ লাগানো। বাড়ির সীমানা প্রাচীরও সজীব গাছের। ইংল্যান্ডের কান্ট্রিসাইড গিয়ে দেখিনি। ছবিতে দেখা সেই গ্রামছবির সঙ্গে এলাকার মিল আছে মনে হল।

অরবিন্দ রোডে কাকা আমাদের নিতে এসেছিল। একটা বুলেভার্ড ধরে হাঁটছিলাম। হঠাৎ একজন হন্তদন্ত হয়ে এসে কাকাকে পাকড়াল। হাঁটুর ওপরে তোলা লুঙ্গি। গায়ে সোয়েটার। উত্তেজিতভাবে কাকার কানে কানে কীসব বলল। কিছু বুঝতে পারিনি। কাকাও পেরেছে বলে মনে হল না। ঠেকনা দেওয়ার জন্য শুধু বলল, ‘সব ঠিক আছে। হবে হবে।’

তিন

বনভোজনস্থলটা বেশ পছন্দ হয়ে গেল। সেই গাছ, খোলা চত্বর আর ফাঁকে ফাঁকে সুন্দর বাড়ি। অতিথিদের একজন জোরকদমে গান জুড়েছেন। আঁ আঁ চিৎকারে সুর তোলা সেই গান গাছগাছালির ফাঁকফোকর দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বাতাসে। কিন্তু গানের একটা শব্দও বোঝা যাচ্ছে না।

গান শোনাচ্ছেন এক অতিথি।

ইন্দ্র ততক্ষণে ছবি তুলতে শুরু করেছে। কত্তো ফ্রেম। এক অতিথি মুখে মিটিমিটি হাসি মেখে আঁ আঁ করা গানটাই শুনছেন। মনে হল, উনি বুঝতে পারছেন। গানের কথা না হোক, তার ভাব, মাধুর্য। তার পাশেই আরেকজন একমনে বাবার মহাপ্রসাদ তৈরিতে ব্যস্ত। তাঁর গলায় একটা কার্ড ঝুলছে। এক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি কার্ড। হয়তো কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। হয়তো ভেবেছেন, ফিস্টেও গলায় কার্ড ঝুলিয়ে যাওয়াই রীতি। ভারিক্কিও লাগে। একটা চেয়ারে পায়ের ওপরে পা তুলে, শরীরটা একটু বাঁদিকে কাত করে গম্ভীর মুখে বসে আছেন একজন। সেদিন শীত অল্প ছিল। তারপর দুপুর হয়েছে। কিন্তু সেই অতিথি দেখলাম, অবিকৃত মুখে হনুমান টুপি চাপিয়ে বসে। আরেক জায়গায় একসার চেয়ারে বসে কয়েকজন কিশোরী-কিশোরী, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, তরুণ। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছেন। কিন্তু সে দেখায় দর্শনটাই নেই।

বাগানের একপাশে রান্নার ব্যবস্থা। সেখানে কাকার কানে কানে কথা বলা সেই অতিথি। এখনও উত্তেজিতভাবে কীসব বলছেন। বোঝা গেল, উনি তদারকি করা পছন্দ করেন। ওঁর নাম সাজাহান।

এই দেখাশোনার ফাঁকে গায়ক ভদ্রলোক হাঁ মুখ খানিক বন্ধ করেছিলেন। সেই ফাঁকে মাইক্রোফোন ধরলেন সেই হনুমান টুপি। কানে এল ঘোষণা, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ইন্টারন্যাশনাল হ্যাপিম্যান অরুণাভ মজুমদার আয়োজন করেছেন বনভোজন, ফিস্ট এবং চড়ুইভাতির।’ একই বিষয়ের তিনটি সমার্থক শব্দ কেন বোঝার আগেই আবার নির্ঘোষ, ‘ঘোষ ফার্মেসি। মসলন্দপুর অরবিন্দ রোডের নিকটে। এখানে সুগার, চোখের ডাক্তার বসেন।’ এবার পুরোটাই বোধগম্য হল। মানে ‘যেমন খুশি ঘোষণা করো’ খেলছেন ঘোষক। যাঁর যেটা দরকার সেটা তুলে নেবেন। আমরা যেমন তুলে নিলাম, ইন্টারন্যাশনাল হ্যাপিম্যানকে। তাঁর এত ফূর্তির উৎসটা জানা দরকার।

ঘোষক সজল কুমার।

যেখানে রান্না হচ্ছিল তার পাশেই নালা। জল চলেছে জমিতে। তারপর ডোবা। তার পাড় দিয়ে হেঁটে গেলে ডানহাতে পোলট্রির খাঁচা। তবে শূন্য। মুরগি নেই। খাঁচা পেরিয়ে বাগান। আরেকটা পুকুর। খাঁচার পিছনে চাষের জমি। তাতে চোখে সর্ষে ফুল দেখলাম। মানে সত্যিই সর্ষে চাষ হয়েছে। আমরা খাঁচার কাছে পৌঁছেছি, হঠাৎ হাজির সেই হ্যাপিম্যান। লম্বাটে, রোগাভোগা চেহারা। কিন্তু বুকের অপরিসর খাঁচায় বড়সড় একটা হৃদপিণ্ড আছে লোকটার। নাম অরুণাভ মজুমদার। সবাই রোনাদা বলেই জানে তাঁকে।

খাঁচা আর ডোবার মাঝে সিমেন্টের বেঞ্চ। তাতেই আড্ডা জমল। আড্ডা মানে জানতে চাওয়া, এমন ‘জরা হটকে’ কাজের উৎসটা কোথায়? লোকে বউ, ছেলেমেয়ে, শালি, শালাজ নিয়ে শীতকালে ফিস্টি করে। আর তুমি কিনা নিজের বাড়ির বাগানে গুচ্ছের পাগল জোগাড় করেছ? অবাক করলে মোশাই!

হ্যাপিম্যান চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও কাজে জড়িত। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যাতায়াত আছে। মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রেও। সেখানেই দেখেছেন, লোকে যাদের পাগল বলে তাদেরও ঠিক ঠিক পথে ঠেলে দেওয়া যায়। বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালেই একজনকে দেখেছিলেন, প্রথম বছর সে চুপচাপ, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকত। দ্বিতীয় বছরে গিয়ে দেখেন, সে-ই গাছে জল দিচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসকেরা বুঝিয়েছিলেন রোনাদাকে, নিয়মিত কাউন্সেলিং আর ভালবাসা দিয়ে এদেরও কিছুটা সামাজিক করা যায়। সেই চেষ্টাই করেন উনি। শুধু বছরে একবার ফিস্টের আয়োজন নয়, সারা বছরই তাঁর সঙ্গীসাথীদের জন্য থাকে নানা ব্যবস্থা। চুলকাটার ব্যবস্থা, বিড়ির জোগান দেওয়া, চিকিৎসা…অনেক কিছু। বলতে বলতেই গলা ধরে আসে রোনাদার।

হ্যাপিম্যান রোনাদা।

চার

সেদিন ফিস্টে হাজির ছিলেন খানতিরিশেক অতিথি। তাঁরা প্রত্যেকেই একে অপরের থেকে আলাদা। সমস্যাও ভিন্ন। যেমন গায়ক ভদ্রলোক। বছর দুয়েক আগেও তাঁকে বাড়িতে চেন দিয়ে বেঁধে রাখতে হতো। হনুমান টুপির ঘোষক ঘোষণাকে পেশা করতে চান। কিন্তু জুতসই একটা নাম ঠিক করতে না পারায় আর পেশাদার হয়ে উঠতে পারেননি। এলাকায় বিনে পয়সায় মাইক ফুঁকে দেন। যে ভদ্রলোক মহাপ্রসাদ ঘুঁটছিলেন তিনি একবার গঙ্গাসাগর থেকে ফিরে কান্নাকাটি জুড়ে দেন রোনাদার কাছে, ‘আর কোনওদিন যাব না গঙ্গাসাগরে।’ কেন রে? কাঁদতে কাঁদতেই তিনি জানিয়েছিলেন, ‘পুলিশ আমার সব গাঁজা কেড়ে খেয়ে নিয়েছে।’

দেখা হয়েছিল গোবিন্দর সঙ্গে। প্রচণ্ড খাটুন্তে। বেশ রসিক। আমাদের ধরে জানালেন, গামছা আনতে ভুলে গিয়েছেন। তাই আলুর বস্তার গামছা পরে আজ চান করেছেন। আলুর বস্তা মানে এখনকার জাল জাল বস্তাগুলো। সেগুলো পরা আর না পরায় কী তফাৎ সেটা আর গোবিন্দকে জিজ্ঞাসা করিনি। তবে আমাদের মতো মনোযোগী এবং রসিক শ্রোতা পেয়ে গোবিন্দ বেশ কিছু ছড়া শুনিয়ে দিলেন। সবই আদিরসময়। যেসব শুনে আমরা শিশু থেকে পাকতেড়ে হয়েছি। কাকা তো লালাভ। দ্রুত ‘হয়েছে হয়েছে’, ‘ঠিক আছে’ বলে সামাল দিয়েছিল। গোবিন্দ যে রসিক, আগেই মালুম হয়েছিল। রোনাদা ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘গোবিন্দ কাজকর্ম হচ্ছে তো?’ গোবিন্দর উত্তর, ‘তুমি আর কথা বলো না। গত বছর বললে বম্বে নিয়ে গিয়ে ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবে। দিলে না তো!’ দেখা হয়েছিল, আড়াই-তিন ফুটের.মোহিতের সঙ্গে। সে নাকি মোবাইলে সারাক্ষণ কারও সঙ্গে প্রেম করে।

অনুষ্ঠানের অতিথিরা।

ততক্ষণে খাওয়ার সময় হয়েছিল। খেতে বসার আগে শাজাহান ইন্দ্রকে একপাশে টেনে নিয়ে গেলেন। ফিসফিস করে কীসব বললেন। ইন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করতে বলল, ‘ও যখন খাবে তখন একটা ছবি তুলে দিতে হবে।’ রোনাদা জানতে চায়, ‘ছবি নিয়ে কী করবি?’ আর কোনও উত্তর নেই।

অতিথিরা তখন খেতে বসেছেন। আর আমার মনে ঘুরছে প্রশ্ন, এই যে লোকগুলোকে কিছুটা সামাজিক করে তোলার চেষ্টা, প্রাপ্য সামাজিক সম্মানের কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, সেটা এখানকার লোকে কীরকমভাবে নেন? চিন্তার কারণ ছিল না। কারণ ততক্ষণে উত্তর পাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এলাকারই এক মেয়ে কিছুক্ষণ আগেই তাঁর স্বামীকে নিয়ে এসেছিলেন। কিছুদিন আগে বাবা মারা গিয়েছেন। এতগুলো লোকের জন্য কম্বল, চাদর দিয়ে গেলেন। এসেছিলেন অভিজিৎদা। এলাকার জামাই। ২৬ জানুয়ারি মস্তি না করে এঁদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। আট বছর পরে প্রথমবার ফিস্টে যোগ দিয়েছেন রোনাদার স্ত্রী এবং মেয়ে। ওঁর মা-বাবাও ছেলের চেষ্টায় উৎসাহ দেন। ফিস্টে ছিলেন তাঁরা।

তখন খেতে বসেছি। হঠাৎ শাজাহানের খেয়াল হল, মিষ্টির কথা। রোনাদা মিষ্টি আনতে ভুলে গিয়েছেন। বাইকে দৌড় লাগালেন। আমি পাশে বসা অভিজিৎদাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘এঁদের কেন পাগল বলা হয়?’ দারুণ উত্তর দিলেন উনি, ‘সবই ঠিক আছে। কিন্তু মাঝে কোথায় একটা হাওয়া ঢুকে গেছে। তাতেই সব গোলমাল।’ আমাদের খাওয়ার সময় রুধির শুনিয়েছিলেন ‘শোলে’ সিনেমার একেরপর এক ডায়লগ। রুধির মানে সেই মিটিমিটি হাসির গানবোদ্ধা। আমরা খাচ্ছি। আর অতিথিরা বাড়ি ফিরছেন। তাঁদের জন্য ভ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে চড়তে নারাজ গায়ক ভদ্রলোক। তিনি হারমোনিয়াম নিয়েই দেড় কিমি হাঁটবেন। কেন? তাঁর উত্তর, ‘লোককে আবার ব্যতিব্যস্ত করা কেন?’ বীরবলের ঘোড়ায় চড়া পাগলের কথা মনে পড়ে?

পোশাক বিতরণের সময়ে।

নালার জলে হাত ধুয়ে উঠছি, কানে এল গান, ‘দেখি, নকল পাগল সকল দেশে আসল পাগল কয়জনা’। সেই মহাপ্রসাদবাবা গান ধরেছেন। এই ফিস্টে এমন খাঁটি থিম সং আর কী হতে পারে!…

কোথায় যেন পড়েছিলাম, এই দুনিয়ায় সবাই নাকি পাগল! শুধু যারা ভাল হয়ে যায় তাদের জন্যই পাগলগারদের ব্যবস্থা। ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা, আকবর কিন্তু বীরবলকে পাগল খুঁজতে বলেননি। বলেছিলেন, বোকা খুঁজতে। কী করি বলুন! ভাল হয়ে গেলে কি মাথার ঠিক থাকে!

রোনাদাও কিন্তু তাঁর অতিথিদের পাগল বললে রাগ করেন।

সমাপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *